নির্বাচনে কুটকৌশল অবলম্বন করতে বিএনপি এবার বিদেশ থেকেও কলকাঠি নাড়ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচন এলেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ এবং উন্নয়নবিরোধী একটি চক্র ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। নির্বাচনে কুটকৌশল অবলম্বন বা কারচুপির মাধ্যমে কিংবা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে তাঁরা আটঘাট বেঁধে মাঠে নামে। অগ্নিসন্ত্রাস, যানবাহন পোড়ানো, বোমাবাজি, নাশকতা বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে গৃহবন্দি করতে চায়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার তারা বিদেশ থেকেও কলকাঠি নাড়ছে।’
জনগণের সাড়া না পেয়ে ভাড়াটে বাহিনী দিয়ে বিএনপি নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট পাবে না- এটা বুঝতে পেরে আগে থেকে এবার তাঁরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। হরতাল-অবরোধের নামে যানবাহন পোড়ানো, মানুষ হত্যা, রেললাইন উপড়ে ফেলাসহ বিভিন্ন নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরের সরকার পরিচালনার পথ-পরিক্রমায় যা কিছু ভুলত্রুটি, তার দায়ভার আমাদের। সাফল্যের কৃতিত্ব আপনাদের। আমাদের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে যাচ্ছে দেশ। এই উত্তরণ যেমন একদিকে সম্মানের, অন্যদিকে বিশাল চ্যালেঞ্জেরও। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আবারো ইশতেহার নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারো আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে একটি বাস্তবায়নযোগ্য নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করেছি। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনাগুলোর ধারাবাহিকতা দ্বাদশ নির্বাচনী ইশতেহারেও রক্ষিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ কথার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা থাকা সত্ত্বেও সরকার পরিচালনা করতে গিয়ে সবসময়ই যে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, এমন দাবি করবো না। তবে আওয়ামী লীগ কথামালার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমরা যা বলি, তা বাস্তবায়ন করি। ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন তার প্রমাণ।’
তিনি বলেন, ‘মাঝে-মধ্যে মনুষ্য সৃষ্ট, প্রাকৃতিক এবং বৈশ্বিক বাধাবিপত্তি আমাদের চলার গতিপথকে মন্থর করেছে। ২০১৩-১৬ সময়ে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ বিস্তারের চেষ্টা মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়েছে। ২০০৯ সালের পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে ২০২০ সালে যখন বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। এই মহামারি গোটা বিশ্বের অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছিল।’