স্টাফ রিপোর্টারঃ মা সন্তানের সবচেয়ে আপনজন। আবার মায়ের কাছেও সন্তানের থেকে প্রিয় কেউ নেই, কিছু নেই। সৃষ্টির শুরু থেকেই মা-সন্তানের বন্ধন চিরন্তন, শাশ্বত। সন্তান জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই এ বন্ধন তৈরি হয়ে যায়। মায়ের সঙ্গে সন্তানের সবচেয়ে গভীর ভালোবাসার সম্পর্ক। বিপদ-আপদ, ঝড়-ঝামেলা, দুঃখ-ব্যথা থেকে মা সন্তানকে আগলে রাখেন। পৃথিবীর আর কেউ মায়ের মতো করে সন্তানকে ভালোবাসেন না। তাই তো বড় হয়েও একটু ব্যথা পেলে অবচেতনভাবে কণ্ঠস্বর থেকে বেরিয়ে আসে ‘মা’। মায়ের ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। এমনকি বাবার থেকেও মায়েরা সন্তানকে অনেক বেশি ভালোবাসেন বলেই প্রচলিত। গেল ২০ জানুয়ারি ঘটনা। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা সলঙ্গা থানার ৩নং ধুবিল ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ড আমশড়া গ্রামে হাটপাড়া মৃত দেলওয়ার হোসেন দেলবারের বাড়ির পার্শ্বে রোস্তার মোড়ে উপর একটি মৃত কুকুর দুই থেকে তিনদিন মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার দুটি বাচ্চা জানেনা যে তার স্নেহ ও মমতাময়ী মা কখন তাদের ছেড়ে এহু যোগতের মায়া ছেড়ে পরোলক যোগতে চলে গেয়েছেন। তখনো দুইটি বাচ্চা মায়ের স্নহ ভালোবাসা পাওয়ার জন্য এভাবে মায়ের বুকের ভিতর শুয়ে থেকে মায়ের বুকের দুধ খেতে দেখা গেয়েছে। এই হলো সেই স্নহ ও মমতাময়ী মা। মহান আল্লাহ তা’আলা ১০০ ভাগ দয়া আর নিজের গাছে রেখেছেন সকল সৃষ্টি কূলকে দিয়েছেন ১ভাগ দয়া ভাগ করে তারি অংশ বিষেশ এই স্নহো ও মোমতাময়ী মা। মরে পরে থেকেও বাচ্চাদের ছেড়ে চলে যেতে তার কষ্ট হচ্চে। বাচ্চারাও মাকে শেষ বিদয় দিতে চাচ্ছে না। যুগে যুগে সন্তানদের জন্য মায়ের এমন আত্মত্যাগের হাজারো উদাহরণ রয়েছে। ঘটনাটি সলঙ্গা আমশড়াতে ঘটেছে। তবে মা-সন্তানের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার পেছনে একটি নিয়ামক অনেক আগেই বের করেছেন গবেষকেরা। মা-সন্তানের এই বন্ধনের জন্য আছে একটি বিশেষ হরমোনের প্রভাব। হরমোনের বিষয়টি তোলার পর কেউ কেউ হয়তো ভাববেন, মায়ের ভালোবাসায় আবার এসব কী! কিন্তু বিষয়টি তা-ই। একাডেমিক জার্নাল আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের তথ্যানুযায়ী, অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণের ফলে মা তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন। ইসরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় এমনটিই বলা হয়েছে। আর এটা করেছেন রুথ ফেল্ডম্যান। এতে বলা হয়েছে, অক্সিটোসিন হরমোনের কারণেই মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা বেশি হয়ে থাকে। আর এ জন্যই মায়েরা অন্য যে-কারও চেয়ে সন্তানকে বেশি ভালোবাসেন। গবেষণাটি ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়। এতে জানানো হয়, যখন একজন মা তাঁর সন্তানকে স্পর্শ করেন বা কোলে নেন, তখন অক্সিটোসিন হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এতে মায়ের ভালো লাগা বা সুখানুভূতিও বাড়ে। মা আনন্দে থাকেন। আবার যখন মা সন্তানকে স্পর্শ করতে পারেন না বা সন্তান থেকে দূরে থাকেন, তখন এই হরমোন নিঃসরণ কমে যায়। তখন মায়েদের মন খারাপ থাকে, বিষণ্নতা বেড়ে যায়। প্রকৃতির নিয়মেই সন্তান প্রসবের সময় মায়ের শরীরে অক্সিটোসিন নিঃসরণ বেড়ে যায়। আর এতেই প্রসবকালীন ব্যথা অনেকটা প্রশমিত হয়। একজন নারীর জীবনে সন্তান জন্মদানের পরের কয়েকটি মুহূর্তে এই হরমোন নিঃসরিত হয় সবচেয়ে বেশি। এ জন্য এই সময় মায়েরা সন্তানের প্রতি বেশি আকর্ষণ বা ভালোবাসা অনুভব করেন। মায়ের কাছে সন্তান জন্মদানের সময়টি শ্রেষ্ঠ সময় বলে মনে হয়। অক্সিটোসিন হরমোনটি ঐন্দ্রজালিক হরমোন নামেও পরিচিত। এই হরমোনের কারণেই মূলত মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো উপভোগ করেন। এ সময়টা তাঁরা তুলনামূলক বেশি প্রফুল্ল থাকেন। সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে যে মা-সন্তানের বন্ধন দৃঢ় হয়—সেই প্রচলিত কথারই প্রমাণ এটা।