অনলাইন ডেস্কঃ
জাতীয় সংসদের শূন্য ঘোষিত পাঁচটি আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টিকিট পাওয়াটাই সংশ্লিষ্টদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকটি আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর একাধিক প্রভাবশালী নেতা। আছেন জাতীয় নেতা ও প্রয়াত সংসদ সদস্যদের স্বজনরাও। এ অবস্থায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীকে মোকাবেলা করে দলীয় মনোনয়ন আদায় করতে পারলেই জয় নিশ্চিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলী ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও যোগ্যরাই মনোনয়ন পাবেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভা ডাকা হবে। সেখানেই মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।’
রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি দলে দলীয় মনোনয়ন পাওয়াটা বড় চ্যালেঞ্জ। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত পার্লামেন্টারি বোর্ড প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও যোগ্যতা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান জানান, পাঁচটি আসনের বিপরীতে মোট ১৪১টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ হয়েছে।
ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ২০টি। তাঁদের মধ্যে প্রয়াত সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, আওয়ামী লীগ নেতা ড. আওলাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপকমিটির সাবেক সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর পুত্রবধূ সুলতানা কামালের ভাতিজি নেহেরীন মোস্তফা দিশি উল্লেখযোগ্য।
আসনটিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর সবুর আসুদও নৌকা প্রতীক পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঢাকা-১৮ আসনে ৫৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। আসনটিতে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী ব্যবসায়ী নেতা ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তবে দলের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাই চান, আসনটিতে একজন রাজনীতিবিদকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।
একাধিক সূত্র জানায়, আসনটিতে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক অথবা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দলের মধ্যে জোরালো দাবি রয়েছে। তবে সিদ্দিকুর রহমান মনোনয়নপত্র নিলেও নানক বা নাসিম কেউই ফরম সংগ্রহ করেননি।
আসনটিতে অন্যদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা হাবীব হাসান, এস এম তোফাজ্জল হোসেন, ভাটারা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া প্রমুখ।
সিরাজগঞ্জ-১ আসনে সবচেয়ে কম মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে । এখানে স্থানীয় প্রয়াত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, মোহাম্মদ নাসিমের ভাতিজা শেহেরিন সেলিম রিপন ও ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।
পাবনা-৪ আসনে ২৮টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর প্রয়াণে শূন্য হওয়া এই আসনে তাঁর স্বজনদের অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন ডিলুর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, মেয়ের জামাই, খালাতো ভাই, ভাগ্নিজামাইসহ আরো কয়েকজন। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রবিউল আলম বুদু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আলী জিরু, শিল্পপতি জালালউদ্দিন তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রশীদুল্লাহ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
নওগাঁ-৬ আসনে প্রয়াত সংসদ সদস্য ইস্রাফিল আলমের স্ত্রী সুলতানা পারভীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ ৩৪ জন দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা রয়েছেন। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক একাধিক নেতাও ফরম তুলেছেন।