উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:
মিয়ানমার জান্তা কর্তৃক বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তরের নবম ধাপের দুই দফায় ৭০৫ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ছেড়েছে।
বুধবার(৫ জানুয়ারি) দুপুরে উখিয়া ডিগ্রী কলেজ অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প হতে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ৮টি বাস এবং বিকালে ৭টি বাসে ২৯১ জনসহ মোট ৭০৫ রোহিঙ্গা এ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশী নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।নবম ধাপের দুইদফায় ৭০৫ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়। পরে তাদেরকে চট্টগ্রাম থেকে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা যায়।রোহিঙ্গাদের বিশাল বহরের সামনে ও পেছনে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। নবম দফার প্রথম পর্যায়ে স্বেচ্ছায় এসব রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ত্যাগ করেছেন।
বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাঝিরা জানান, স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়ে সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জানালে যারা যেতে রাজি হয়েছে তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে ভাসানচর স্থানান্তর করা হচ্ছে।
স্বেচ্ছায় ভাসানচর যেতে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে প্রথমে উখিয়া কলেজ মাঠে নিয়ে আসা হয়। পরে সব প্রক্রিয়া শেষে প্রটোকলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে জাহাজে করে ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হবে।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার নাইমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি আরোও জানান, নিবন্ধনের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় ভাসানচর স্থানান্তরে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের আওতায় আনা হয়েছে।
ভাসানচরে যাওয়াদের অনেকেই তাদের আত্নীয় স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন। এসব রোহিঙ্গাদের মাঝে আবেগঘন মুহুর্ত লক্ষ্য করা যায়। তারা একে অপরের সাথে বিদায়ী কুশল বিনিময় করেন। আবার অনেকে ভাসানচর যেতে অনীহা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গতঃরোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছিল গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে। প্রথম ধাপে ১৬৪২ জন রোহিঙ্গা নেয়া হয়েছিল ভাসানচরে। এভাবে ধাপে ধাপে বিশ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে সেখানে নেয়া হয়। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বর ২১৭ পরিবারের ৫৫২ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়।
সরকারী অর্থায়নে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচে করে সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের উপযোগী আবাসস্থল তৈরি করা হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া- টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের চাপ কমাতে সরকার এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।