অনলাইন ডেস্ক:
চার দশক আগে দেশে ফিরে যে লড়াই শুরু করেছিলেন, সেটা এখনো শেষ হয়নি। দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য অর্জনে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন সামনে থেকে। দেশের সীমানা পেরিয়ে তিনি পৌঁছে গেছেন বিশ্বনেতার কাতারে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে তাঁর নিরলস সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এমন প্রশংসা করেছেন দলের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছে ইতিহাসের প্রয়োজনে।
গতকাল মঙ্গলবার ২৮ সেপ্টেম্বর ছিল শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন আলোচনাসভা, দোয়া মাহফিল ও দরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করেছে। নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর পরিবেশে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তাঁর জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দেন।
একাধিক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আগামী নির্বাচনের আগে দলকে আরো আধুনিক করে গড়ে তোলা এবং দলের অভ্যন্তরে ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনাসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আরো আধুনিক, স্মার্ট আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য দলের মধ্যে কোনো বসন্তের কোকিল নয়, ত্যাগীদেরই জায়গা করে দিতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে দল সাজাতে হবে। যাঁরা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাঁরা আগামীতে আওয়ামী লীগের টিকিট পাবেন না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা আজ একটি ব্র্যান্ডের নাম। তিনি নিজেই একটি ইতিহাস। ইতিহাসের প্রয়োজনে শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে উঠে এসেছেন। দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বনেতার কাতারে পৌঁছেছেন। তাইতো শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব বিশ্বে প্রশংসিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, দেশের এত উন্নয়ন হয়েছে। দেশের মানুষ ভালো আছে। শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের কারণেই বাংলায় আজ সোনালি আকাশ। দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বের রোল মডেল শেখ হাসিনা।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। আরো বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করে কৃষক লীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সমীর চন্দ্র। সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের উদ্যোগে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
যুবলীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।
সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে মিলাদ, দোয়া মাহফিল এবং অসহায় ও দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজাল বাবু প্রমুখ।
হাসুমনির পাঠশালা নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে সকালে রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ও গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বঙ্গমাতা পরিষদের আয়োজনে বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আলোচনাসভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান।