গুম থেকে ফেরা ব্যক্তিদের আয়নাঘর নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের মিল পেয়েছে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। আয়নাঘরের অনেক আলামত এরই মধ্যে নষ্ট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কাছে ৪০০টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
ইতিমধ্যে ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে জানিয়ে কমিশনের সদস্য নাবিলা ইদ্রিস বলেন, ‘নতুন কিছু বিষয় আমরা জানতে পেরেছি। এর আগে কেউ কখনো গুম নিয়ে এসব ঘটনা বলেননি। থানায় তাদের জিডিও নেওয়া হয়নি। আমরা সবাইকে কমিশনে আসতে আহ্বান জানাই। আমরা মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে চাই। ঢাকার বাইরে থেকেও অনেক অভিযোগ আসছে। কেউ আসতে না পারলে ডাকযোগে, ই-মেইলে অভিযোগ পাঠাতে পারেন। আমরা সেগুলোও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আমরা ফোন করে তাদের কথাগুলো শুনে নেব।’
কমিশনের আরেক সদস্য নূর খান বলেন, ‘আমরা ভুক্তভোগীর পরিচয় দিয়ে তাকে আলাদা করব না। প্রতিটি অভিযোগ আমরা শুনতে চাই। কী হয়েছিল তা জানতে চাই। কিভাবে আইন না মেনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল তা বুঝতে চাই।
এর আগে ২৭ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে এই কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বিশেষ শাখা, গোয়েন্দা শাখা, আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনো সংস্থার কোনো সদস্যের হাতে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য এই তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের কার্যক্রম শুরুর পর ১৩ কর্মদিবসে ৪০০ অভিযোগ জমা পড়েছে। ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কার্যালয়ে গিয়ে গোপন বন্দিশালার সন্ধান পেয়েছে কমিশন। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলটি (জেআইসি) ডিজিএফআইয়ের সদর দপ্তরের ভেতরেই। দোতলা ওই ভবনে ২২টি সেল আছে।