বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহে সরকারি চাল ক্রয় কমিটির বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বছর উপজেলাটির মেসার্স নুর এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি বন্ধ চালকলকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩০৭ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের। ইতোমধ্যে মিলটি সরবরাহ করেছে ১০২ মেট্রিক টন চাল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরাদ্দ পাওয়া চালকলটি বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েক বছর যাবত। চালকলটির চাতালটি জুড়ে ধুলো, বালি, আবর্জনার স্তুপ। চালকলটির মালিক আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আকরাম হোসেনের ভাই নুরুজ্জামান ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে দীর্ঘদিন। তারপরও তার চালকলের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩০৭ মেট্রিক টন চাল। এছাড়া আলফাডাঙ্গার কুসুমদি গ্রামে বিসমিল্লাহ রাইচ মিলের স্বত্বাধিকারী মোঃ ফজলুর রহমান জানান, এ বছর তিনি মিলটিতে বরাদ্দ পেয়েছেন ২৮ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের। অথচ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যলয়ের আহরণ ও ব্যয়ন কর্মকর্তা মোঃ হারুনার রশিদের স্বাক্ষরিত বরাদ্দ আদেশে দেখা যায় চালকলটি বরাদ্দ পেয়েছে ৭৮ মেট্রিক টন।খাদ্যগুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, আমি নতুন এসেছি আমার দায়িত্ব নেওয়ার আগে বরাদ্দকৃত চালের মধ্যে ১০২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে বিসমিল্লাহ রাইচ মিল এ পর্যন্ত কোন চালই সরবরাহ করেনি।মেসার্স নুর এন্ড ব্রার্দাস চালকলের স্বত্বাধিকারী মোঃ নুরুজ্জামান এর (০১৭১৭৭৫৪৭৭৭) মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ সাহিদার রহমান জানান, আমি সদ্য ফরিদপুরে যোগদান করেছি। ইতঃপূর্বে আলফাডাঙ্গায় বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য সংগ্রহে কিছুটা অনিয়মের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় ভবিষ্যতে খাদ্যশস্য সংগ্রহে যাচাই-বাছাই করে বরাদ্দ দেওয়া হবে। উল্লেখ্য এ বছর দু’টি চালকলকে বরাদ্দ দেওয়া হলেও চাতাল মালিক ও খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যোগসাজশ করে গোপনে বাইরে থেকে নিম্নমানের চাল সংগ্রহ করে আগে থেকে গুদামে সংরক্ষিত ভাল চালের সাথে মিশ্রণ ঘটিয়ে গুদামজাত করতে গেলে হাতেনাতে ধরে ফেলেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহিদুল হাসান জাহিদ। বিষয়টি তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকরামুল হককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। গত মাসের ২৮ আগস্ট পর্যন্তু উপজেলাটিতে ৩৮৫ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহের বরাদ্দ আদেশ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই চাল সংগ্রহের সময়সীমা বর্ধিত করা হলেও এ পর্যন্তু ১০২ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে সরকারি খাদ্যশস্য ক্রয় কমিটি।