দুর্গোৎসবের দ্বিতীয় দিন মহাসপ্তমীতে দেবী দুর্গার পায়ে প্রথম পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন ভক্তরা। সপ্তমীর সকালে গতকাল শনিবার পূজার শুরুতেই দুর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান করানো হয়। এ ছাড়া দেবীর চক্ষুদানের মাধ্যমে দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। আজ রবিবার মহাষ্টমী।
অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপূজা। রামকৃষ্ণ মিশনসহ বিভিন্ন মণ্ডপে কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
শাস্ত্র মতে, মহাসপ্তমী পূজায় বিশেষ রীতি মেনে স্নান করানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে ধর্মীয় রীতিতে নতুন বস্ত্র ও নানা উপাচারে তাঁর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন দেবীর তৃতীয় চক্ষু দান করা হয়। সপ্তমী পূজার শুরুতে নবপত্রিকা প্রবেশ ও প্রকৃতির বিভিন্ন সৃষ্টির মধ্যে ৯টি গাছের ফুল, ফল ও পাতা দিয়ে সব অশুদ্ধকে শোধনের মাধ্যমে দেবীর পূজা করা হয়।
সকালে পূজা শুরু হলেও দুপুরের পর থেকে মণ্ডপগুলোতে ঢল নামে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নয়, সব ধর্মের দর্শনার্থীরাই মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে ভিড় করে।
শারদীয় দুর্গোৎসবের তৃতীয় দিনে প্রতিবছরের মতো এবারও মহাষ্টমীতে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে হবে কুমারীপূজা। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে তাতে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করাই কুমারীপূজা।
শাস্ত্র মতে, এদিন মা দুর্গার অন্য কোনো নামে কুমারীর নামকরণ হবে। কোনো ছোট্ট শিশুকন্যাকে ‘কুমারী মা’-এর আসনে বসানোর পরপরই সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারীপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সকাল ১১টায় কুমারীপূজা ও বিকেল ৫টা ২৪ মিনিটে সন্ধিপূজা আরম্ভ হয়ে সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিটে শেষ হবে।
মধ্যাহ্নে মহাপ্রসাদ বিতরণ এবং সন্ধ্যায় আরতি আয়োজন থাকবে।
এদিকে গতকাল শঙ্খ, উলুধ্বনি, কাঁসর ঘণ্টা ও ঢাকের তালে সারা দেশে উদযাপন করা হয়েছে মহাসপ্তমী। অশুভের বিনাশ ঘটিয়ে পৃথিবীতে শুভ শক্তির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহাসপ্তমীর দিনে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, শ্রীশ্রী যমুনামাঈ আশ্রম ও মন্দির, স্বামীবাগ লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম, ধানমণ্ডি কলাবাগান মাঠ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, বাংলাবাজার পূজা কমিটি, নর্থব্রুক হল রোড, প্রতিদ্বন্দ্বী পূজামণ্ডপ, তাঁতীবাজার পূজা কমিটি, শঙ্ঘমিত্র শাঁখারীবাজার, পাণিটোলা, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি, হাজারীবাগ সুইপার কলোনি, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, আজিমপুর সর্বজনীন পূজামণ্ডপ, বনানী পূজামণ্ডপ, গৌতমমন্দির, ভোলাগিরি আশ্রমসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যা আরতিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মণ্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।