নতুন জাগরণ এনেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। বিশেষ করে মেয়েদের ফুটবলে এই আসর হয়েছে দেশের জন্য মাইলফলক। এই আসরেই খেলাটায় হাতেখড়ি হওয়া মারিয়া মান্দা, সানজিদা আক্তার, তহুরা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের হাত ধরেই পরে এসেছে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। আগামীর মারিয়া, সানজিদাদের উঠে আসার সেই বঙ্গমাতা ফুটবল এবং ছেলেদের বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আরেকটি আসরের পর্দা নেমেছে গতকাল শনিবার।
২০২৩ সালের এই আসরের ছেলেদের বিভাগে শিরোপা জিতেছে জামালপুরের মাদারগঞ্জের চর গোলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গতকাল ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে হওয়া ফাইনালে চর গোলাবাড়ী স্কুল ২-১ গোলে হারিয়েছে রংপুরের মিঠাপুকুরের তালিমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। আসরের সেরা খেলোয়াড় হয়েছে চর গোলাবাড়ী স্কুলের মোহাম্মদ আকাশ। একই স্কুলের সাজ্জাদ হোসেন হয়েছে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
মেয়েদের বিভাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে-২০২৩-এর সেরা দল হলো লালমনিরহাটের পাটগ্রামের টেপুরগাড়ি বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। একই মাঠে হওয়া ফাইনালে টেপুরগাড়ি বিদ্যালয় ৩-১ গোলে হারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে। মেয়েদের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছে টেপুরগাড়ি স্কুলের রিশা আক্তার। সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছে একই স্কুলের মাহমুদা আক্তার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাঠে উপস্থিত থেকে ফাইনাল খেলা উপভোগ করেছেন। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দুই দলের খেলোয়াড়দের পুরস্কৃতও করেছেন তিনি। সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে খেলা শুরু হয় এই আসরের। ক্রমান্বয়ে উপজেলা সেরারা জেলায়, জেলার সেরারা বিভাগে এবং সর্বশেষ চূড়ান্ত পর্বের খেলা হয় বিভাগীয় দলগুলোকে নিয়ে। বিশাল কলেবরের এই আসর দেশের ফুটবল অঙ্গনের এক বড় ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়ে এ কথা উল্লেখ করতেও ভোলেননি যে বাংলাদেশের নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাজয়ী দলের পাঁচজন সদস্য এ প্রতিযোগিতা থেকেই উঠে এসেছিলেন।
২০২৩ সালের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়ে আগামী দিনের জন্য তাদেরও উৎসাহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আজকে এখান থেকে যাদের শুরু, একটা পর্যায়ে তারাই আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনবে।’
শুধু ফুটবল নয়, সারা দেশে সব ধরনের খেলাধুলার চর্চা বাড়াতে প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। দেশীয় সব খেলার প্রতিও জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘শুধু ফুটবল নয়, আমাদের দেশীয় অনেক খেলা আছে এবং অন্যান্য খেলাও রয়েছে। তাতে আমাদের খুদে খেলোয়াড়রা যেন সুযোগ পেতে পারে। কারণ খেলাধুলার মধ্য দিয়েই আমাদের ছেলেমেয়েদের আরো মেধা বিকাশের সুযোগ হবে।’