ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য জেলায় চেয়ে কম হলে গত কিছুদিন যাবত বেড়ে চলেছে। জেলায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৬জনের এবং আক্রান্ত সংখ্যা ৪হাজার ৩৮০জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩হাজার ৮২৫জন। রোববার দুপুর পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছেন ২৩জন।
২৫০শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা রোগীরা অবাধে বাইরে বের হয়ে ঘুরাঘুরি করছেন। হাসপাতালের ভেতরে অবস্থিত দোকানে চা-পান খাচ্ছেন, সিগারেট ফুকছেন। শুধু তা ই নয় করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনেরা আইসোলেশন ওয়ার্ডে খেয়াল খুশি মতো ঢুকে আড্ডায় ব্যস্ত থাকে। এছাড়াও আইসোলেশন ওয়ার্ডের পেছনে গাছে দোলনা বেধেঁ দোল খেতে দেখা যায় করোনা আক্রান্ত তরুণীদের। করোনা আক্রান্ত এক যুবতীকে দেখা যায় হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াতে। হাসপাতালে আসা এক রোগীর স্বজনকে দেখা যায় হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতরে গিয়ে টয়লেটের খোঁজ করতে।
এদিকে রোববার হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে আইসোলেশনের অবাধ ঘুরাফেরার বিষয় গুলো তুলে ধরা হয়। ভার্চুয়ালী মিটিংয়ে যুক্ত ছিলেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (বিজয়নগর-সদর) আসনের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান, বিএমএ’র জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন প্রমূখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন জানান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে প্রশাসনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের স্বজনদের অবাধ ঘুরাফেরার বিষয়টি অবগত করা হয়। মিটিংয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। এরআগে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান এবিষয়টি উপস্থাপন করে। হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে যারা দায়িত্ব পালন করেন, তাদের মধ্য থেকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব প্রদান করতে বলা হয়। এক্ষেত্রে কেউ ঝামেলা করলে পুলিশ বিষয়টি দেখবে।
এই বিষয়ে ২৫০শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই হাসপাতালে যোগদান করেছি। আজকে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি। এখানে ৫০শয্যার আইসোলেশন বলা হলেও বাস্তবে এখানে শয্যা সংখ্যা অনেক কম। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার জেলার সিভিল সার্জন ও বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদককে দাওয়াত দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আজকের মিটিংয়ে আইসোলেশনের রোগী ও তাদের স্বজনদের অবাধ ঘুরাফেরার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। হাসপাতালে দায়িত্ব প্রাপ্তরা বিষয়টি দেখবেন। এছাড়া প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়া হবে’।