অনলাইন ডেস্কঃদলীয় নির্দেশ অমান্য করে যেসব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে রয়ে গেছেন, তাঁদের বিষয়সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজ মঙ্গলবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আজ সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠকটি শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে যেসব মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা ভোটে রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা বৈঠকে নির্ধারণ করা হতে পারে। আবার কেন স্বজনরা ভোট করতে পারবেন না, সে বিষয়েও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার দিক থেকে আলোচনা আসার ইঙ্গিত রয়েছে।
সরকারে থাকা আওয়ামী লীগ চাইছে, উপজেলার ভোট থেকে যেন মন্ত্রী-এমপিদের নিকটাত্মীয়রা সরে যান, কিন্তু এমন প্রার্থীর সংখ্যা খুবই কম। সারা দেশে ৪৭৫টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
সব মিলিয়ে আত্মীয়-প্রার্থী সর্বোচ্চ ৫০টি জায়গায় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ১৪৮ উপজেলার মধ্যে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন-প্রার্থী ১৪ জন বলে জানা গেছে। সামগ্রিক বিবেচনায় অল্প আত্মীয়-প্রার্থীর কারণে গোটা নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু মূল সমস্যা অনুগত প্রার্থীতে।
প্রায় প্রতিটি উপজেলায়ই স্থানীয় সংসদ সদস্যের রাজনৈতিক অনুসারী ও অনুগত প্রার্থী ভোট করছেন। যেখানে স্থানীয় এমপির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব থাকাটা স্বাভাবিক। এতে করে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা আরো বেড়ে যাচ্ছে। যদিও সরকার চাইছে ভোটকে প্রভাবমুক্ত রাখতে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় প্রার্থী নিয়ে মিডিয়ায় অনেক আলোচনা হয়েছে।
তাই সভায় এ বিষয়ে আলোচনা উঠবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দল।’
এবারের ভোটে আওয়ামী লীগ দলীয় কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। ফলে একই উপজেলায় আওয়ামী লীগেরই একাধিক নেতা ভোটে অংশ নিচ্ছেন। এতে করে স্থানীয় পর্যায়ে দলের ভেতর বিভেদ বাড়লেও কেন্দ্র সরাসরি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারছে না। কেননা কোনো প্রার্থীই বিদ্রোহী নন। দল প্রার্থী ও প্রতীক না দেওয়ায় ভোট হচ্ছে উন্মুক্ত।দেশে মোট ৪৯৫টি উপজেলা রয়েছে। এর মধ্যে চার ধাপে ৪৭৫ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৪৮ উপজেলায় আগামী ৮ মে ভোট হবে। এই ধাপের নির্বাচনের প্রচার চলছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন এক হাজার ৬৯৩ জন প্রার্থী। এ ধাপে বান্দরবানের দুই উপজেলার ভোট বন্ধ ঘোষণা হয়েছে।মূলত নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এতে করে ভোটের মাঠে যেমন প্রার্থী বেশি দরকার, তেমনি নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়াকেই নিরপেক্ষ করা দরকার বলে মনে করছে সরকার। ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৭৫ উপজেলার মধ্যে মন্ত্রী-এমপির প্রার্থী খুবই অল্প হবে বলে ধারণা করছে আওয়ামী লীগ। তাই মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রেখেই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা সম্ভব হবে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে উপজেলার ভোটে আত্মীয় প্রার্থীদের অংশ না নিতে নিষেধ করা হয়েছে। কে কার প্রার্থী, কোন প্রার্থী কোন নেতার কেমন আত্মীয়, সেটি জানতে দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সাংগঠনিক নেতাদের একটি তালিকা করতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘তালিকা আমাদের কাছে আছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যদি তালিকা নিয়ে কথা তোলেন তাহলে আমরা সে তালিকা উপস্থাপন করতে পারব।’