Friday , 22 November 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন- সরাইলে দ্বন্দ্বের জেরে যুবক খুন, আতংকে গ্রাম ছাড়ছে প্রতিপক্ষের লোকজন, লুটপাট ও ভাংচুর

অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন- সরাইলে দ্বন্দ্বের জেরে যুবক খুন, আতংকে গ্রাম ছাড়ছে প্রতিপক্ষের লোকজন, লুটপাট ও ভাংচুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ অটোচালক দেলোয়ার হোসেন খুনের ঘটনায় গ্রামজুড়ে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। 
স্থানীয়রা জানায়, ৭ এপ্রিল পাকশিমুল দক্ষিন পাড়া গ্রামের কাসেম মিয়ার জমিতে কাজ করতে যায় শাহ আলী ও সিদ্দিক গ্রুপের দু’ দল শ্রমিক। পরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। জানতে পেরে রাতেই স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বিষয়টির মিমাংসা করে দেন। 
অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার রাতেই শাহ আলীর লোকজন ওই গ্রামের দুর্গত গোষ্ঠীর হান্নান মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেনকে ছুরিকাঘাত হত্যা করে। 
দোলোয়ারের হত্যার ঘটনায় নিহতের মা পাকশিমুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ৩৮ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করে। নিহত দেলোয়ারের মা জানান, আমার ছেলে একজন অটোরিক্সা চালক। এসব দ্বন্দ্ব সংঘাতের সাথে সে জড়িত ছিল না। দিনভর অটো চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার আতংকে প্রতিপক্ষের পুরুষরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যান সাইফুলের সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও গৃহপালিত প্রাণিও নিয়ে যায়। 
সরজমিনে দেখা যায়, পরবর্তী হামলার আশঙ্কায় এখনো অনেকে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে। 
গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী মালেকা বেগম জানান, তার ঘরে থেকে সোনাদানাসহ সবকিছুই লুট হয়ে গেছে। এদিকে ঘটনার পরপরই এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 
পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার ববি জানান, গ্রামে দুটি প্রতিদ্বন্ধী গ্রুপ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে আমার স্বামী সেটি মীমাংসা করে দেন। খুনের ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। প্রতিপক্ষের লোকজন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার স্বামীকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছে। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, আমার গোষ্ঠীর লোক খুন হলো, উল্টো আমাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মিথ্যা মামল দিয়ে হয়রানি করছে। আমাকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে তারা অপপ্রচারসহ হামলা, মামলা করে হয়রাণি করছে। এর পেছনে সাবেক চেয়ারম্যান কাসম আলীর হাত রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তিনি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
সরাইল থানার এ.এস.আই সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা এখানে নিয়োজিত আছি। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সংঘাত এড়াতে আমরা নিয়োজিত থাকব। 
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.এম.এম. নাজমুল আহমেদ জানান, খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এলাকার অরাজকতা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ মোতায়েন আছে। 

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply