প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত এবং বাংলাদেশি পণ্যের জন্যে নতুন বৈশ্বিক বাজার অন্বেষণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গতকাল সোমবার গণভবনে রপ্তানিবিষয়ক ১১তম বৈঠকে এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশি পণ্যের জন্যে নতুন বাজার খোঁজার সুযোগ বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে। আমাদের এসব বাজার ধরতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। এ ছাড়া কিছুই অর্জন করা যাবে না। একটি দেশের অর্থনীতি মূলত রপ্তানির ওপর নির্ভর করায় আমরা রপ্তানি বাড়াতে অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে নিয়ে ভাবছি। কাজেই আমরা এর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি।’
কভিড-১৯ মহামারির কারণে ক্ষয়ক্ষতি পূরণের জন্য তাঁর সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩৭.০৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৩৩.৮৪ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, ‘আমরা কভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সত্ত্বেও রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় রপ্তানি থেকে আয় ছিল ১৬.৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এখন ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬০.৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
শেখ হাসিনা রপ্তানির জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করতে এবং পোশাক, ওষুধ, ডিজিটাল ডিভাইসসহ রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল ডিভাইসের চাহিদা বাড়ছে, তাই একে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। ‘আমাদের নতুন বাজার অন্বেষণ করতে হবে এবং রপ্তানি পণ্যের মধ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে। চার থেকে পাঁচটি রপ্তানি পণ্য ঠিক করতে হবে। অনেক দেশ আমাদের পণ্য আমদানি করতে চায়, তাই কোন দেশের কোন পণ্য দরকার, সেটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
বিশ্বজুড়ে প্রক্রিয়াজাত খাবারের চাহিদা বৃদ্ধিকে বিবেচনায় রেখে প্রধানমন্ত্রী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীতা উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেক দেশ আমাদের খাদ্য আমদানি করতে ইচ্ছে প্রকাশ করছে। এ জন্য আমাদের খাদ্যসামগ্রী রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে।’
সূত্র : বাসস