Wednesday , 30 October 2024
E- mail: news@dainiksakalbela.com/ sakalbela1997@gmail.com
ব্রেকিং নিউজ
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী
--সংগৃহীত ছবি

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্কঃ

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ আদালতের রায় পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আদালতে শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,  কোটা সংস্কার আন্দোলনে সব হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টেলিভিশন ও বেতারের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া সরাসরি ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালে ছাত্রসমাজের আন্দোলনে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে।

তিনি বলেন, ‘কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত  উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক।
অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারাবার বেদনা যে কত কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে।’সরকারপ্রধান বলেন, ‘যারা মুত্যুবরণ করছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কমনা করছি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই।

সাধারণ পথচারী, দোকানিদের আক্রমণ, এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুল্যান্স চলাচলে বাধা প্রদান করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আবাসিক হলে প্রভোস্টদের হুমকি দেওয়া হয় এবং আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সঙ্গে এই সব সন্ত্রাসীর কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য জীবন-জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার তা আমি করব।’

তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এরা যে-ই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি আরো ঘোষণা করছি, হত্যাকাণ্ডসহ যেসব অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, সুষ্ঠু বিচারের ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে সেসব বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।’
কাদের উসকানিতে সংঘর্ষের সূত্রপাত হলো, কারা কোন উদ্দেশ্যে দেশকে একটি অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিল, তা তদন্ত করে বের করা হবে।’

আন্দোলনরত কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময়ে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করে তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকেন। একই সঙ্গে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখেন।’

তিনি বলেন, ‘সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিল আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।  শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে আদালত। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। এই আইন প্রক্রিয়া সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতিকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তারা হতাশ হবে না।’

সূত্রঃ বাসস

About Syed Enamul Huq

Leave a Reply